সহস্র এক আরব্য রজনী
- ১ -
যখন সমুদ্র ঢুকে পড়ছে খাঁড়িতে আর নোনা হাওয়ায় ফুলে উঠছে পাল
যেন শঙ্খচিল ডানা মেলছে আর স্রোতে ধুয়ে গেছে নোঙরের সমূহ ওজন
আবার দাঁড়ের ছপ্ ছপ্ আশার ডিঙায় তোলা হয়েছে আহার্য পূর্বরাগ ও ভাটিয়ালি
এবার আমার যাত্রা পূবে অথবা পশ্চিমে উর্দ্ধে অথবা অধোঃতে
শুধু কোনো পথ নয় পিপাসায় কয়েকটি জাদুদ্বীপ
ঘাসের স্বদেশ নয়
ধান সেদ্ধর ঘ্রাণে সোনালি কুসুমের শুধু ফুটে ওঠা নয়
ক্ষুধার্ত ওই দানবের হাঁ-করা গহ্বরে অপলক ঢুকে যাওয়া আর লাল ঝোল মেখে জন্ম জন্মান্তরে ভুলিব না কী ভাল সেই ঘ্রাণ সেই তিক্ততা, ব্যাকরণ মুগ্ধবোধ
- ২ -
প্রথম সমুদ্র পথের যে গপ্পে মাস্তুল ভাঙা সে সব বলেছি তোমাকে, আজ তাই বলা নয়
আজ কোনো অতিকায় লেজের দাপটে অ্যাকোরিয়ামের মাছ তুমিও উত্তাল, তোমার নাসিকা ফোলা সমুদ্রের ঘ্রাণে আর নাবিকের হুল্লোড় বন্দরে বন্দরে । তাদের শিরায় জড়ানো আদর ও তোমার বারে বারে ধর্মান্তর
সামুদ্রিক জল হাওয়ায় তোমার স্বাদু জিভ মরুভূমি থেকে এসেছে বলেই না শুষে নিচ্ছে
তোমার পর্বত তোমার ঘাসজমি নতুন ভঙ্গিমায় ওই নাভিপদ্ম, কাঁপতে থাকা পাতায় পাতায়...
ফুঁসে ওঠা অন্ধকারে ঘা মারতেই প্রলাপের পর প্রলাপ
যেন প্রবল জ্বর থেকে সেরে উঠছে চৈতন্য অথবা মরণ মরে যাই! মরে যাই! ওহোঃ তীব্র জলধারা, পৃথিবীর গর্ভ থেকে উঠে আসা বন্যাধারা অথবা বন্যা নয় সম্মোহন আগ্রাসন সোঁদাভাব যেন কোনো হুন্ড্ররাস ডুডুমার জলপ্রপাত
- ৩ -
এতদিনে তোমাকে ভাবছি বলি গল্প নয় তোমাকেও সঙ্গে নিয়ে যাব
দামাস্কাস-বাগদাদ-মিশর বা ভারত বন্দরে
স্বপ্ন প্রতিষ্ঠার হাজার দিনার ফেলে ছুটে আসছো তুমি, আমি ঘুরলে তুমি ঘুরছ আমার পেছনে অথবা ঠিক পেছনে নও, আমার অন্নভাগে আমার কুয়োমুখ আধো অন্ধকারে
ভেসেছ সেখানে তুমি কালিবর্ণ জলে। তুমি আর স্থির ভাঙা চাঁদ
আমার তো জন্মদোষ চাঁদ দেখলে হাত বাড়াই আয় টিপ আয় টিপ বলে
- ৪ -
কতটা ঝুঁকতে থাকি কতটুকু রোদে পিঠ কতটুকু কমলার রস
সে সব মাত্রা বোধ - রাখাল বাঁশির টান টৈ টৈ মাঠ
ঝুপ শব্দে খসে পড়া আর কুয়ো মধ্যে অন্বেষণ শেখা
যে ডুবছে সিন্ধুজলে লোকে জানে উঠবেই হিসেবের ঝিনুক কুড়িয়ে; যে ডুবেছে কুয়োমধ্যে বচসা হোক তার জন্য ডুবুরি বা কাঁটা ফেলা নিয়ে
জগৎ বিভক্ত হোক--
কে উঠবে কাঁটা গেঁথে আর কে শোয়া জলের অন্তরে